নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় এক ইউপি সদস্যকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত রবীন্দ্র চন্দ্র দাস (৪৫) চর ঈশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য এবং আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে একই পদে প্রার্থী ছিলেন। বাংলা বাজার এলাকার স্বতিষ চন্দ্র দাসের ছেলে সে।
বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বাংলা বাজার থেকে ফেলার বাড়ি পথে খাসেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে দুর্বৃত্তরা তাকে সড়কের ওপর কুপিয়ে হত্যা করে।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আবুল খায়ের জানান, বৃহস্প্রতিবার রাত সোয়া দুইটার দিকে বাংলা বাজার থেকে তিনটি মোটরসাইকেলযোগে রবীন্দ্র চন্দ্র দাসসহ সাতজন এক সাথে উপজেলা সদর ওছখালীতে বাসায় ফিরছিলেন। পথে খাসেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে দুর্বৃত্তরা তাদের গতিরোধ করে। এ সময় রবীন্দ্রকে রেখে বাকিরা চলে যায়।
এক পর্যায়ে দুর্বত্তরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে এবং হাত-পায়ের কব্জি কর্তন করে সড়কের ওপর ফেলে রেখে চলে যায়। খবর পেয়ে টহল পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আশংকাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় কিছুক্ষণের মধ্যে তার মৃত্যু হয়। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ হত্যাকান্ড ঘটতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ। লাশ ময়না তদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো চলছে।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত রবীন্দ্র চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণ, ডাকাতি, চাঁদাবাজি এবং অবৈধ অস্ত্র রাখাসহ ২৫টি মতো মামলা রয়েছে। ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে হাতিয়ার আফাজিয়া বাজারে যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের শরীরচর্চা বিভাগের শিক্ষক আশরাফ উদ্দিনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা মামলার অন্যতম আসামী রবীন্দ্র। নিহত যুবলীগ নেতা আশরাফ উদ্দিন হাতিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহম্মেদ এবং চর ঈশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আহম্মেদের ছোট ভাই। আলাউদ্দিন আহম্মেদের চর ঈশ্বর ইউনিয়নে ২১ জুন অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী।
২০১৭ সালের ৩০ মে চর ঈশ্বর ইউনিয়নের আফাজিয়া বাজারে সকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চালের জন্য স্থানীয় লোকজন ডিলারের গুদাম ঘেরাও করে রাখে। এ সময় ইউপি সদস্য রবীন্দ্র চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাজারে এলোপাতাড়ি গুলি ছোঁড়ে। এ সময় যুবলীগের কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য আশরাফ উদ্দিন ও এক দোকানী গুলি গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনার ১০ দিন পর ১৭ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তারে পর কয়েক মাস হাজতবাস করে জামিনে মুক্ত হন রবীন্দ্র চন্দ্র দাস।